বৃহস্পতিবার দেশের মধ্যে প্রথম বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে দীর্ঘমেয়াদি মহিলা বন্দিদের দিয়ে বিজ্ঞানসম্মতভাবে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন রাজ্য কারা দপ্তরের ডিজি অরুণ কুমার গুপ্তা। এদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার শুভেন্দুকৃষ্ণ ঘোষ, বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক(সাধারণ) নিখিল নির্মল প্রমুখরাও। বৃহস্পতিবার একইসঙ্গে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের মহিলা বন্দিদের দিয়ে কাঁথা স্টিচ সহ হস্তশিল্পের বিভিন্ন কাজেরও সূচনা করে গেলেন ডিজি অরুণ কুমার গুপ্তা। ডিজি এদিন জানিয়েছেন, দেশের মধ্যে প্রথম বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের মহিলা বন্দিদের দিয়ে এই স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির কাজ শুরু হল। একটি বেসরকারি সংস্থা প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে মুম্বাই থেকে এই ন্যাপকিন তৈরির মেশিন বসিয়েছে সংশোধনাগারে। নিয়ে আসা হয়েছে মুম্বাই থেকে কয়েকজন প্রশিক্ষককেও। প্রথম ধাপে তাঁরা ১৫ জন দীর্ঘমেয়াদি মহিলা বন্দিদের এই প্রশিক্ষণ দেবেন। এরপর ওই মহিলারা বাকিদের প্রশিক্ষণ দেবেন।

অরুণ কুমার গুপ্তা জানিয়েছেন, এখান থেকে উৎপাদিত ন্যাপকিন বিপণনেরও ব্যবস্থা করবে ওই সংস্থা। বিনিময়ে বন্দিরা মজুরী পাবেন। প্রসঙ্গত, তিনি জানিয়েছেন, এর আগে দমদম, মুর্শিদাবাদ সহ বেশ কয়েকটি সংশোধনাগারে তাঁরা ছাতা তৈরি, গামছা তৈরির মত বেশ কয়েকটি প্রকল্পের সূচনা করলেও মহিলাদের এই স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির বিষয়টি দেশের মধ্যে প্রথম বর্ধমানেই চালু হল। তিনি জানিয়েছেন, এমনিতেই সংশোধনাগারগুলিতে মহিলাদের জন্য এই ন্যাপকিনের প্রয়োজন হয়। তাই এখান থেকে উৎপাদিত ন্যাপকিন সংশোধনাগারের প্রয়োজন মিটিয়ে অতিরিক্ত হলে তা তাঁরা খোলাবাজারেও বিক্রির ব্যবস্থা করবেন। প্রাথমিকভাবে তাঁরা মনে করছেন প্রতি মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার ন্যাপকিন তৈরি করা যাবে।

প্রসঙ্গত ডিজি জানিয়ে যান, বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে খুব শীঘ্রই তৈরী করা হচ্ছে কারা রক্ষীদের জন্য একটি ব্যারাক। দোতলা ওই ব্যারাকের একতলায় থাকবে বন্দিদের তৈরি বিভিন্ন দ্রব্যের বিপণন কেন্দ্র। তিনি জানিয়েছেন, জেল থেকে যেহেতু সংশোধনাগারে এখন উন্নীত করা হয়েছে তাই আক্ষরিক অর্থেই বন্দিদের সংশোধন ও সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে এই ধরণের একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এদিনই ডিজি বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে দ্বিতীয় একটি প্রকল্পেরও সূচনা করেন। বেসরকারী একটি সংস্থার মাধ্যমে মহিলা দীর্ঘমেয়াদী বন্দিদের দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে কাঁথা স্টিচ, সূচী শিল্পের বিভিন্ন কাজ। এদিন ডিজি এই প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন। প্রথম ধাপে এই হস্তশিল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ১০ জন মহিলা বন্দিকে। উল্লেখ্য, বর্তমানে এই কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রয়েছেন প্রায় ১০০ জন মহিলা বন্দি।

Like Us On Facebook