রাজ্যের শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমানে এসে বর্ধমান ২ নং ব্লকের কৃষি দপ্তরে চাষিদের সঙ্গে কৃষি সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করে গেলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শুক্রবার রাজ্যপাল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন ৩৮তম সমাবর্তন উৎসবে যোগ দিতে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এদিন কলকাতা থেকে বর্ধমানে আসার আগেই রাজ্যপাল জেলাশাসককে ই-মেলে জানান, তিনি কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে চান। রাজ্যপালের কাছ থেকে সেই ই-মেল আসতেই জেলা প্রশাসনের তৎপরতা তুঙ্গে উঠে। তড়িঘড়ি ২নং জাতীয় সড়কের কাছে বর্ধমান ২নং ব্লককে এব্যাপারে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নির্দেশ দেওয়া হয়।

জানা গেছে, এরপরই এই ব্লকের নবস্থা, নান্দড়া, বড়শুল প্রভৃতি এলাকা থেকে প্রায় জনা ৪০ চাষিকে দ্রুত নিয়ে এসে হাজির করা হয় বড়শুলের বর্ধমান ২নং ব্লক অফিসে। এদিকে, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সমাবর্তন উৎসব শেষে সরাসরি রাজ্যপাল কলকাতা ফেরার পথে হাজির হন বড়শুলের ২নং ব্লক কৃষি দফতরে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলাও। বর্ধমান ২নং ব্লকের বিডিও সুবর্ণা মজুমদার জানিয়েছেন, নিজেকে কৃষক পরিবারের ছেলে বলে পরিচয় দিয়ে রাজ্যপাল এদিন উপস্থিত কৃষকদের জানান, তিনি দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় কৃষি দফতরে কাজ করেছেন। পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বেশকিছু কৃষি সংক্রান্ত ভাল কাজ কৃষকেরা করছেন। করোনা অতিমারীর সময় কৃষকদের অবদান ভোলার নয়। এরপরই তিনি, ব্লকের একাধিক কৃষকের চাষ সংক্রান্ত বিষয়ে খবর নেন। বিকল্প চাষ নিয়ে গুরুত্ব আরোপ করার উপর জোর দিতে বলেন।

বর্ধমান ২ নং ব্লকের নাদড়া এলাকায় এক কৃষকের পলি হাউস দেখার আগ্রহও প্রকাশ করেন রাজ্যপাল কিন্তু দূরবর্তী হওয়ায় তা সম্ভবপর হয়নি। এরপর রাজ্যপাল অর্গানিক চাষ চেন্নাই ও হায়দ্রাবাদে কিভাবে হচ্ছে তাতে কৃষকেরা ও সমাজ কিভাবে উপকৃত হচ্ছে তা তুলে ধরার পাশাপাশি অর্গানিক চাষ নিয়ে আগ্রহী চাষি যারা চেন্নাই ও হায়দ্রাবাদে গিয়ে অর্গানিক চাষ সম্পর্কে জানতে চান তাদের একটা তালিকা দিলে তিনি তাদের সেখানে গিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানান। নিবিড় কৃষি সংক্রান্ত বিষয়ে চাষীদের আরও উৎসাহিত করার পাশাপাশি কম জল, সার বা কৃষি যন্ত্রপাতি ছাড়া কিভাবে লাভজনক ফসল চাষ করা যায় – সে সম্পর্কেও এদিন রাজ্যপাল চাষিদের এগিয়ে আসার জন্য বলেন।

এদিন রাজ্যপালকে এভাবে কাছে পেয়ে রীতিমত অভিভূত চাষি বিকাশ লাহা, উদয়চাঁদ হাজরারা জানিয়েছেন, এই প্রথম কোন রাজ্যপাল এভাবে চাষিদের সঙ্গে কথা বলতে সরাসরি চাষিদের কাছে এলেন। তিনি এদিন যে পরামর্শ দিয়েছেন তাতে তাঁরা খুশী। চাষিরা জানিয়েছেন, রাজ্যপালের আবেদন মেনে তাঁরা কিছু চাষি প্রশিক্ষনের জন্য অন্য রাজ্যে যাবেন। এদিন জেলা শস্য সুরক্ষা আধিকারিক বিশ্বজিত মণ্ডল জানিয়েছেন, রাজ্যপাল চাষিদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। তাই তাঁর যাতায়াতের কাছাকাছি বর্ধমান ২নং ব্লককেই তাঁরা চিহ্নিত করেছিলেন। রাজ্যপাল এদিন খুশী হয়েছেন এখানকার চাষিদের সঙ্গে কথা বলে।

Like Us On Facebook