২০২০ সালে স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে, যে কোন দিন আর্থিক অনুদানও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই আতঙ্কে ২০১৭ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণি থেকে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পঠনপাঠন শিকেয় তুলে ছাত্র-ছাত্রী থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা সকলেই এখন স্কুল বাঁচানোর জন্য প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন। একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের ফিডার স্কুল কাঁকসার বনকাটির ডাঙ্গালের পন্ডিত রঘুনাথ মূর্মূ মেমোরিয়াল ইংরেজি মাধ্যম স্কুলটি এইভাবেই দুশ্চিন্তার বোঝা মাথায় নিয়ে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
প্রাকৃতিক সোন্দর্য্যে ঘেরা বনকাটির জঙ্গলমহলে ২০০৪ সালে সমাজের পিছিয়ে পড়া উপজাতি সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের শিক্ষালাভের জন্য এই স্কুলটি গড়ে তোলে একটি বেসরকারি সেচ্ছাসেবী সংস্থা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দপ্তরের আর্থিক অনুদানে স্কুলটি চলে। প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠনের পর একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে সরাসরি ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সুযোগ পেত এই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। কিন্তু গত ২৯ আগস্ট অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দপ্তরের একটি বিশেষ নোটিশে স্কুলকে জানানো হয়েছে ২০১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে একলব্য স্কুলের ফিডার স্কুল থাকছে না। একমাত্র প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমেই একলব্য স্কুলে ভর্তি হওয়া যাবে। ফলে ২০১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে একলব্য স্কুলের ফিডার স্কুল হিসাবে বিবেচিত হবে না রঘুনাথ মূর্মূ মেমোরিয়াল স্কুল। ২০১৬ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত যেসব ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে ভর্তি হয়েছে তারাই কেবল একলব্য স্কুলে সরাসরি ভর্তির সুযোগ পাবে। এতেই উদ্বেগ চরম আকার নিয়েছে।
এই স্কুলে বর্তমানে ১২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ১২ জন অশিক্ষক কর্মী রয়েছেন। কর্ম্যচ্যুত হয়ে পড়ার আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরা। সকলের কাছে স্কুল বাঁচানোর লড়াইটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুস্মিতা পাঠক বলেন, ‘স্কুল বাঁচানোর জন্য প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে এখন আমি হতাশ। প্রশাসনের কোন সাড়া পেলাম না। হাতে গড়া একটা প্রথম সারির ফিডার স্কুল এইভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অথচ আমি একজন শিক্ষিকা হয়েও স্কুলটি বাঁচাতে পারছি না। মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি স্কুলটি বাঁচাতে।’ দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘ওই স্কুলটি বন্ধের কোন খবর আমার জানা নেই। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের করা আবেদন আমি উপর মহলে পাঠিয়ে দিয়েছি।’