রবিবার কাটোয়ার বাস দুর্ঘটনার জেরে জেলাজুড়ে বাসে নজরদারি শুরু করল পুলিশ। সোমবার সকাল থেকেই গোটা জেলা জুড়ে জায়গায় জায়গায় বাসের ছাদ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় যাত্রীদের। বেশ কিছু জায়গায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে যাত্রী তোলায় করা হয়েছে জরিমানাও। এমনকি বাসের ছাদের সিঁড়িও কেটে ফেলা হচ্ছে পুলিশের পক্ষ থেকে।

এদিকে, বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কাটোয়ায় এই বাস দুর্ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্ধমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতের নাম তরুণ দাস (৩৭)। কাটোয়ার মুলোটি গ্রামে তাঁর আদি বাড়ি হলেও বর্তমানে কোপা গ্রামে বসবাস করতেন। অপরদিকে, নিয়ম বহির্ভূতভাবে যাত্রী পরিবহণ ও পরিবহণ দফতরের নিয়ম না মানায় আটক করা হয়েছে এদিন বেশ কয়েকটি বাস। জেলাজুড়ে বাসের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি পরিবহণ দফতরের নিয়ম মেনে বাসগুলি যাত্রী পরিবহণ করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলার সদর শহর বর্ধমান সহ কাটোয়া কালনা মহকুমাতেও চলছে অভিযান। খতিয়ে দেখা হচ্ছে বাসগুলির স্প্রিড লিমিট মিটার লাগানো আছে কিনা।পাশাপাশি ফিটনেস সার্টিফিকেট, রিসোল টায়ার, হেডলাইট, ব্রেকিং লাইট ঠিকঠাক আছে কিনা তাও এদিন থেকে খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। নিয়ম না মানায় বেশ কিছু বাসকে আটক করার পাশাপাশি বহু বাসকে জরিমানাও করা হয়েছে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গেছে।

এদিন এক বাস চালক জানিয়েছেন, মালপত্রের জন্য ক্যারিয়ার লাগানো আছে। আমরা খুলে দেব। এটা শেষ গাড়ি তাই সময় বিশেষে যাত্রীকেও ওঠাতে হয়। চাপা উচিত নয়। কিন্তু শেষ গাড়ি হওয়ায় অনেক সময় কিছু করার থাকে না। বাধ্য হয়ে ওঠে। ভুবন মাঝি নামে বাসের এক হেল্পার এদিন জানিয়েছেন, মালপত্রের জন্য সিঁড়ি লাগানো ছিল। জোর করে অনেক যাত্রী চেপে পড়েন। এখন খুলে দিচ্ছি। বাসের চালক সুবীর ঘোষ এদিন প্রশাসনের এই তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন, ছাদের ক্যারিয়ার, সিঁড়ি খোলার জন্য বলছে। আমরা খুলে দিচ্ছি। চাপতে না দিলে যাত্রীরাও অনেক সময় ঝামেলা করে। এমনকি যাত্রীদের এলাকায় সংগঠিত ভাবে গণ্ডগোল করা হয়।

পরিবহণ দফতরের মোটর ভেহিক্যাল ইনস্পেক্টর সুব্রত গোস্বামী জানিয়েছেন, এই ধরণের চেকিং নিয়মিত হয়। প্রতি মাসেই স্পেশাল চেকিং হয়। সমস্ত রকম মেন্টেন্যান্স, ফিটনেস সমস্তটাই পরিবহণ দফতর থেকে দেখা হয়। তবে তিনি এদিন জানিয়েছেন, রবিবার কাটোয়ায় বাস দুর্ঘটনার জেরে বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আগামীতে কোনও বাসের ছাদে ক্যারিয়ার থাকবে না। তিনি জানিয়েছেন, সিএফ গ্রাউণ্ডে নিয়মিত সিএফ হয়। দু’ভাবে সিএফ হয়। ফিজিক্যাল ইন্সপেকশন এবং ফটোশ্যুট করা হয়। তাই সমস্তটাই রেকর্ড থাকে। ছাদে ক্যারিয়ার থাকলে ফিটনেস পাস হবে না। সংগঠনগুলিকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসএলডি, হেড লাইট, ব্রেক লাইট, রিসোলিং টায়ার, বডি ফিটনেস, সামনের কাঁচ এগুলো দেখা হচ্ছে। তিনি এদিন জানিয়েছেন, আজ এখন পর্যন্ত ৫ টা বাসকে আটক করা হয়েছে। সিএফ, ইন্স্যুরেন্স, ট্যাক্স ভ্যালিড নেই এমন অনেক বাস চলছে। অনেক বাস-ই আসল টায়ার লাগিয়ে নিয়ে সিএফ-এ আসছে। আবার সিএফ করিয়ে বাইরে গিয়ে আবার রিসোল টায়ার লাগিয়ে নিচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন এদিন কাটোয়া এবং কালনাতেও এই চেকিং হচ্ছে।

Like Us On Facebook