বুধবার সকালে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের উপর বহিরাগতদের হামলার পাল্টা জুনিয়র ডাক্তারাও বেধড়ক মারল রোগী, রোগীর আত্মীয়স্বজন থেকে রোগীপক্ষের লোকজনদের। এদিন সকালে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ালো বর্ধমান হাসপাতাল জুড়ে। অভিযোগ, জুনিয়র ডাক্তারদের তাণ্ডবের হাত থেকে রেহাই মেলেনি খোদ হাসপাতাল সুপার ডা. উৎপল দাঁ থেকে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারদেরও। খোদ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রিয়ব্রত রায় জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটাতে গেলে তাঁকে রীতিমত গো-ব্যাক ধ্বনি দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরই মাঝে কর্তব্যরত সংবাদমাধ্যম হাসপাতালে পৌঁছালে তাঁদের ওপর রে রে করে চড়াও হন জুনিয়র ডাক্তাররা। মারধর করা হয় ৩ জন সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিককে। ভেঙে দেওয়া হয় ক্যামেরা। কেড়ে নেওয়া হয় মোবাইল ফোন।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার থেকে এনআরএস কাণ্ডের জেরে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। মঙ্গলবার জরুরী বিভাগের গেট আটকে রোগী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর বুধবার সকাল থেকেই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সমস্ত গেট তালা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে কোন রোগীকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, এদিন সকালে রোগীদের ভর্তি নিতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এই সময় বহিরাগতরা আন্দোলনরত ডাক্তারদের লক্ষ্য করে ইঁট ছোঁড়ে। সেই ইঁটের আঘাতে ডেন্টাল কলেজের এক ছাত্রের কপাল ফাটে। তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালেই। এরপরই জুনিয়র ডাক্তাররা হাতে রড, লাঠি, বাঁশ, কাঠ, ক্রিকেটের ব্যাট নিয়ে পাল্টা প্রতিরোধ শুরু করেন। তাদের নিরস্ত করতে হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, এই সময় রাস্তায় থাকা সাধারণ মানুষের দিকেও তেড়ে যান জুনিয়র ডাক্তররা। তারই সঙ্গে সাংবাদিকদের ছবি তুলতেও বাধা দেওয়া হয়।

এদিকে, এই ঘটনায় জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছেন, সকাল থেকেই এই ঘটনার ওপর তাঁরা নজর রেখেছেন। যাঁরাই গোলমাল করুক না কেন আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে, জেলাশাসকের কড়া নির্দেশ পেয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরিন্দম নিয়োগী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রিয়ব্রত রায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। ঘণ্টাখানেক ধরে আলোচনাতেও অনড় থাকেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয় সিনিয়র ডাক্তার এবং মেডিকল প্রফেসরদের দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার। এরপর বিকালের দিকে জুনিয়র ডাক্তারদের ছাড়াই কাজে যোগ দেন সিনিয়র ডাক্তাররা। এই ঘটনায় ৩ জনকেপুলিশ আটক করেছে।


Like Us On Facebook