বিজেপি কর্মী খুনের প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুর্গাপুর মহকুমায় ১২ ঘন্টা বন্ধের ডাক দিল বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির রাজ‍্য নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় সোমবার দুর্গাপুরে এসে বিজেপির বুথ কমিটির সভাপতি সন্দীপ ঘোষকে গুলি করে খুনের প্রতিবাদে ১২ ঘন্টা বন্ধের ডাক দেন। জানা গেছে, রবিবার রাতে রথযাত্রা এবং প্রধানমন্ত্রীর দুর্গাপুরের সভার প্রস্তুতি নিয়ে কাঁকসার মলানদিঘির সরস্বতীগঞ্জে বিজেপির বুথ কমিটির মিটিং সেরে বাইক করে বাড়ি ফেরার পথে দুই বিজেপি কর্মী সন্দীপ ঘোষ ও জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুষ্কৃতীরা ব্যাপক মারধর করে এবং দুষ্কৃতীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সন্দীপের। খবর পেয়ে বিজেপি কর্মীরা আহত জয়দীপকে উদ্ধার করে মিশন হাসপাতালে ভর্তি করে। মৃত সন্দীপকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়।

সন্দীপের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর বিজেপি কর্মীরা আসানসোলে সন্দীপ ঘোষের দেহ নিয়ে মিছিল করতে গেলে উত্তেজনা ছড়াল আসানসোল জেলা হাসপাতাল চত্বরেই। পুলিশ বাধা দেয় মিছিল করতে। বিজেপি কর্মী ও পুলিশের মধ্যে ধস্তাধস্তি বেধে যায়। এরপর গাড়ি থেকে মৃতদেহ বের করে আসানসোল জেলা হাসপাতাল ঢোকার মুখে এসবি গড়াই রোড অবরোধ করে দেয় বিজেপি কর্মীরা। প্রায় দেড়ঘন্টা এই অবরোধ চলে। হাসপাতালে ঢোকার মুখে বাধার সম্মুখীন হয় রোগীরা। তাঁদের দাবি ছিল হটন রোড দিয়ে মিছিল করে দলীয় অফিসে মৃতদেহ নিয়ে যেতে দিতে হবে। শেষ পর্যন্ত ঘটনাস্থলে আসেন লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং মানবিক কারণে রোগীদের ঢুকতে অসুবিধে হচ্ছে বলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

এরপর সন্দীপের মৃতদেহ নিয়ে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় ও বিজেপি রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসু সোমবার মৃতদেহ নিয়ে আসানসোল থেকে দুর্গাপুরের আমড়াইয়ে বিজেপির পূর্ব ঘোষিত সভায় পৌঁছন। সেখান থেকে মৃতদেহ নিয়ে সন্দীপ ঘোষের বাড়ি কাঁকসা যাওয়ার পথে পুলিশ বাধা দিলে লকেট চট্টোপাধ্যায়রা মুচিপাড়ায় পথ অবরোধ করে বসে পড়েন। প্রায় বিশ মিনিট জাতীয় সড়ক প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এরপর মৃতদেহ পুলিশি ঘেরাটোপে কাঁকসা পৌছায়। লকেট চট্টোপাধ্যায় সরাসরি এই ঘটনায় তৃণমূলকেকে দোষী সাব্যস্ত করে সিবিআই তদন্ত চেয়েছেন। এদিন সন্ধ্যায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ বিজেপি নেতা-কর্মীরা কাঁকসা থানা ঘেরাও করেন।

মঙ্গলবার বিজেপির ডাকা বনধ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘আমরা বন্ধের বিরোধী। সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের আবেদন, আগামীকাল দোকানপাট খোলা রাখুন এবং রাস্তাঘাট সচল রাখুন’।

বিজেপি কর্মী সন্দীপ ঘোষ খুনে যুক্ত থাকার অভিযোগে বিজেপি কর্মীরা স্থানীয় তৃনমূল কংগ্রেসের ৯ জন কর্মীর নামে কাঁকসা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ৯ জনের মধ্যে ২ জনকে আটক করলেও বাকি ৭ জন এখনও অধরা বলে অভিযোগ। তার মধ্যে খুনের মূল অভিযুক্ত শেখ সাইকুলও অধরা রয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি নেতৃত্বের । সোমবার সন্ধ্যা থেকে বিজেপির রাজ‍্য নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসু বিজেপি কর্মীদের নিয়ে সন্দীপ ঘোষ খুনের অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে কাঁকসা থানায় অবস্থান বিক্ষোভ করেন। এদিকে বিজেপি কর্মীদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যাতে ফের অশান্তি না হয় তারজন্য বিশাল পুলিশ বাহিনী কাঁকসা থানা সহ গোটা এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে।






Like Us On Facebook