উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নির্দেশ, একাদশ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের জন্যে স্কুল ১০০ টাকা নিতে পারে। সেখানে বর্ধমান শহরের সিএমএস হাইস্কুল রীতিমতো নোটিস দিয়ে ১১৫০ টাকা দাবি করেছে বলে অভিযোগ। বুধবার স্কুলের দাবি মতো টাকা দিতে না পারায় এক ছাত্রের রেজিস্ট্রেশন আটকে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রের পরিবার জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর (মাধ্যমিক) ও বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেছেন।
জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শ্রীধর প্রামাণিক বলেন, ‘অভিযোগ জমা পড়েছে শুনেছি। এখনও আমার হাতে আসেনি। অভিযোগ দেখার পরে খোঁজ নিয়ে দেখব।’ তবে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিন্টু রায়ের দাবি, ‘রেজিস্ট্রেশনের জন্য ১৫০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। নোটিসটিতে ভুল করে ১১৫০ টাকা হয়ে গিয়েছে। সে জন্যেই যত গোলমাল।’
একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রের মা, বর্ধমান শহরের টিকরহাট বেলতলার বাসিন্দা বিউটি বিশ্বাস জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বা ডিআইয়ের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, স্কুলের দাবি মতো টাকা দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় প্রধান শিক্ষকের কাছে রেজিস্ট্রেশন ফি কমানোর জন্যে আবেদন করা হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তাঁর বলেন, ‘আমার স্বামী কোভিডের সময় কাজ হারিয়েছেন। আমি ঘরেই প্রসাধনী বিক্রি করে সংসার চালাই। টাকা দিতে না পারায় আমার ছেলের রেজিস্ট্রেশন আটকে দিয়েছে স্কুল।’ ওই ছাত্রের বাবা হিরন্ময় বিশ্বাস বর্ধমান থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করে জানান, ‘আমরা ওই টাকা দিতে অপারগ জানার পরে প্রধান শিক্ষক জানিয়ে দেন, ছেলের রেজিস্ট্রেশন হবে না। আমরা ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) দিতে বলি, তাতেও প্রধান শিক্ষক রাজি নয়।’
ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি, টিএমসিপির জেলা সভাপতি সেখ সাদ্দামের দাবি, এ ভাবে টাকা আদায়ের নোটিস সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। সরকারি নির্দেশিকার বাইরে গিয়ে এ ভাবে টাকা চেয়ে নোটিস দেওয়া হলে তা অন্যায় হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হবে।
ছাত্রটিকে রেজিস্ট্রেশন করতে দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষকের দাবি, রেজিস্ট্রেশন করতে কেউ বাধা দেয়নি। ওই ছাত্র তিন মাসে আগে ক্লাসের ভিতর শিক্ষককে তাড়া করেছিলেন, অন্য ছাত্ররা আটকে দেয়। দু’দিন আগে এক শিক্ষককে ফেলেও দেয়। সেই সব ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওই ছাত্রের অভিভাবকরা মিথ্যা রটনা করছেন।