তালিত রেলস্টেশনের গুডস শেডে মাল ওঠানো নামানো নিয়ে দুই গোষ্ঠীর বিরোধের জেরে তৃণমূল নেতা আলমগীর সেখ খুনের ঘটনায় ধৃতদের মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার প্রায় ২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বর্ধমানে জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন গ্রামবাসীরা। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। মঙ্গলবার বর্ধমান থানা এলাকার চাণ্ডুল মোড়ে এই অবরোধের জেরে দীর্ঘ কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত যানচলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। আটকে পরে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্সও। দুর্গাপুরে নির্বাচনী প্রচারে যাওয়ার সময় অবরোধে আটকা পড়েন বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা।

উল্লেখ্য, ৩০ জুলাই তালিত গুডস শেডে দুই গোষ্ঠীর বিরোধের জেরে আলমগীর সেখ খুন হওয়ার ঘটনায় পুলিশ জিয়াউল হক ওরফে চাঁদ, সেখ সাদ্দাম, রাম হাঁসদা এবং রহমত মল্লিক নামে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। এই খুনের ঘটনায় বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল হাসান সহ মোট ১৬ জনের নামে লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়েছে।

এদিন চাণ্ডুল গ্রামের প্রায় হাজার খানেক মহিলা ও পুরুষ চাণ্ডুল গ্রামের বাসিন্দা ধৃত সেখ সাদ্দামের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আচমকাই ২নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। দুপুর প্রায় আড়াইটে থেকে সাড়ে চারটে পর্যন্ত টানা অবরোধ চলে। খবর পেয়ে বর্ধমান থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী হাজির হয়। গলসী থানা থেকেও ছুটে আসেন পুলিশ কর্তারা। কিন্তু বারবার আবেদন নিবেদন করেও অবরোধকারীদের তুলতে পারেনি পুলিশ।

ইতিমধ্যে দুর্গাপুরে নির্বাচনের প্রচারে যাওয়ার পথে অবরোধে আটকে যাওয়া সভাধিপতিকে দেখে অবরোধকারীরা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এদিন অবরোধকারীরা অভিযোগ করেন, আলমগীর সেখ খুনের ঘটনায় নুরুল হাসান সহ ১৬ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত নুরুল হাসানকে গ্রেপ্তার করেনি। উল্টে ৪ জন নিরপরাধকে এই খুনের ঘটনায় মিথ্যাভাবে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা এদিন দাবি করেছেন, অবিলম্বে পুলিস ধৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে তাঁরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন। পরে দফায় দফায় অবরোধকারী ও পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করার পর সভাধিপতি মাইক্রোফোন নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেন, এই খুনের ঘটনায় সাদ্দাম সেখ নিরপরাধ হলে তাকে দুদিনের মধ্যে ছাড়ার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আশ্বাস দেন, এই ঘটনায় যাতে কোনো নিরপরাধ শাস্তি না পায় তা তিনি দেখবেন। কার্যত, সভাধিপতির আশ্বাস পেয়েই এদিন অবরোধ ওঠে।

Like Us On Facebook