সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কাজে গতি আনতে এবার অন্যান্য সরকারি এজেন্সিগুলির পাশাপাশি জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও যুক্ত করা হল। রাজ্য সরকারের এই নতুন উদ্যোগে আশার আলো দেখছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। চলতি বছরের নভেম্বর মাস থেকেই এই নতুন পদ্ধতি তথা কৌশলের মাধ্যমে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য শুরু হয়ে গেল প্রস্তুতি পর্ব।

সোমবার বর্ধমান জেলা প্রশাসনের বৈঠকে এব্যাপার চুড়ান্ত সিদ্ধান্তও নেওয়া হল। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, আগামী ধান কেনার মরশুমে ধান কেনার কাজে গতি আনতে অনেক আগে থেকেই সরকার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। আগামী মরশুমে ধান কেনার কাজে বিভিন্ন এজেন্সির পাশাপাশি নতুন করে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের। চলতি বছর থেকেই এই ধান কেনার কাজে স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের যুক্ত করার চেষ্টা হলেও সময়াভাবে তেমনভাবে করা যায়নি। তাই এবার অনেক আগে থেকেই ধান কেনার কাজে খাদ্য দপ্তরের নিজস্ব ক্যাম্প করে ধান কেনা ছাড়াও বেনফেড, নাফেড, সমবায় সংস্থাগুলির পাশাপাশি জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও যুক্ত করার কাজ শুরু হল। গত মরশুমে গোটা জেলা জুড়েই ১৩৭টি সমবায় ধান কেনার কাজে এগিয়ে আসে। এর ফলে মধ্যস্বত্বভোগীদের সম্পূর্ণভাবে বাদ দিয়ে সরাসরি চাষিদের অভাবী ধান বিক্রি বন্ধ করে তাঁদের কাছ থেকে ধান কেনার কাজ আরও সহজতর হবে।

তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রায় ২৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও ১৭৬টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে এব্যাপারে চিহ্নিত করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, এব্যাপারে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে স্বল্প সময়ের একটি প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে ধান কেনার বিষয়ে।

উল্লেখ্য, এদিন প্রশাসনিক এই বৈঠকে জেলার সমস্ত বিডিও, সমস্ত খাদ্য দপ্তরের ইন্সপেক্টর, রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরাও হাজির ছিলেন। হাজির ছিলেন বিভিন্ন ধান কেনার এজেন্সিগুলির প্রতিনিধিরাও। গতবছর থেকেই রাইস মিলগুলিকে ধান কেনার আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির অনভিজ্ঞতার জন্য তাদের ময়েশ্চার মুক্ত ধান কেনার ব্যাপারে বিশেষ মেশিন দেওয়ারও দাবি তোলা হয়। জেলাশাসক জানিয়েছেন, এব্যাপারে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

চলতি বছরে পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা, কাটোয়া, বর্ধমান উত্তর ও দক্ষিণ মহকুমা থেকে প্রায় ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হলেও অনেক ক্ষেত্রেই সরকার বাধ্য হয়েই সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ধান না পেয়ে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছ থেকেও ধান কেনে। আগামী মরশুমে এই সমস্যা থেকে মুক্ত হতেই এবার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও ধান কেনার কাজে নামানো হচ্ছে। সরাসরি চাষির কাছ থেকে ধান কিনতে এবং অভাবী বিক্রি বন্ধ করতে রাজ্য সরকারের এই নতুন উদ্যোগ।

Like Us On Facebook