আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের মানবিক মুখ দেখল শহর দুর্গাপুর। স্কুলের রসায়ন ল্যাবে চোখে অ্যাসিড পড়ায় চোখ নষ্ট হতে বসা ছাত্রীর চোখের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল কমিশনারেটের পুলিশ।

উল্লেখ্য, ১১ জুলাই দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর ভাবা রোডের মেঘনাদ সাহা হাইস্কুলের রসায়নের শিক্ষক ল্যাবে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফল উৎসুক ছাত্রীদের হাতেনাতে দেখানোর জন্য রাসায়নিক মিশ্রণ কাপড়ে ছেটানোর সময় এক ফোঁটা রাসায়নিক স্কুলের ছাত্রী প্রীতি সিনহার বাঁ চোখে গিয়ে পড়লে প্রীতি যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এই ঘটনায় সকলে হকচকিয়ে উঠলে রসায়নের শিক্ষক প্রীতিকে তাঁর বাইকে করে স্থানীয় ডিএসপি হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। এই ঘটনার খবর পেয়ে প্রীতির বাবা হাসপাতালে ছুটে যান। ডিএসপি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে প্রীতিকে দুর্গাপুরের নামী চোখের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা প্রীতির চোখের চিকিৎসা এখানে সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন। তার চোখের চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারতের চোখের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের এই পরামর্শে আতান্তরে পড়েন প্রীতির বাবা সমীর সিনহা। স্বল্প রোজগার, অস্বচ্ছল পরিবারের মেয়ের চোখ ঠিক করতে ব্যয়বহুল চিকিৎসার প্রয়োজন, কিন্তু সমীরবাবুর সে সামর্থ নেই। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ।

পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মী নারায়ণ মীনা

অস্বচ্ছল পরিবারের ওই ছাত্রীর চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ নেই জানতে পেরে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মী নারায়ণ মীনার নির্দেশে দুর্গাপুর থানার পুলিশ প্রীতির চিকিৎসায় সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। দুর্গাপুর থানার পুলিশ চিকিৎসার জন্য এককালীন কিছু টাকা তুলে দেয় সমীরবাবুর হাতে। প্রয়োজনমত আরও সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দেয় দুর্গাপুর থানার পুলিশ।

পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মী নারায়ণ মীনা বলেন , ‘ওই ছাত্রীর পরিবারের পক্ষে চোখের ব্যায়বহুল চিকিৎসা করানোর সামর্থ নেই জানতে পেরে পুলিশ ওই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে।’

প্রীতির বাবা সমীর সিনহা বলেন, ‘দক্ষিণ ভারতে গিয়ে মেয়ের চোখের চিকিৎসা করানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। আমার মেয়ের চিকিৎসার জন্য পুলিশ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোয় আমি অভিভূত। এবার মেয়েটার চোখের চিকিৎসা করাতে পারব। পুলিশকে অনেক ধন্যবাদ।’

Like Us On Facebook