দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের অবনীন্দ্রনাথ বীথিতে রহস্যময় বৃদ্ধ খুনে নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের তদন্তকারী দল মৃত সত্যরঞ্জন খাঁড়ার এক পরিচারিকা নমিতা মোদককে রবিবার গ্রেফতার করল। ধৃত পরিচারিকা নমিতা মোদককে ম্যারাথন জেরা করার জন্য পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিতে দুর্গাপুর আদালতে তুলবেন বলে জানান দুর্গাপুরের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক মোদী। জানা গেছে, নমিতা মোদক স্থানীয় ডিভিসি মোড়ে বস্তির ভাড়া বাড়িতে থাকেন। দীর্ঘদিন নমিতা সত্যরঞ্জনবাবুর বাড়িতে কাজ করলেও মাঝে কাজ ছেড়ে দেয়। পরে সেপ্টেম্বর মাস থেকে ফের কাজে যোগ দেয়। নমিতা সত্যরঞ্জনবাবুর বাড়ির একজন বিস্বস্ত পরিচারিকা ছিলেন। বাড়ির কোথায় কি রয়েছে নমিতা সব জানতেন। এমনকি বাড়ির চাবিও নমিতার কাছেই থাকত।

রবিবার আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ, ফরেন্সিক বিভাগ ও ফিঙ্গার প্রিন্ট বিষেশজ্ঞ দল ৫ ঘন্টা ধরে মৃত সত্যরঞ্জন খাঁড়ার বাসভবনে আটক মৃতের ছেলে সুমিত ওরফে বাপি খাঁড়াকে নিয়ে সরজমিনে তদন্ত করে নির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে নমিতা মোদক নামে এক পারিচারিকাকে গ্রেপ্তার করে।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেরার মুখে মৃত সত্যরঞ্জনের ছেলে সুমিত জানায় বাড়ির তালার একটি চাবি পারিচারিকা নমিতা মোদকের কাছেই থাকত। জানা গেছে সত্যরঞ্জনবাবু যেদিন খুন হন সেই দিন খুনিরা বাড়ির তালা খুলেই বাড়ির ভিতরে ঢোকে এবং খুন করে বাড়ির তালা বন্ধ করে চম্পট দেয়। এই তালা চাবিই রহস্যময় খুনের কিনারা দেখাতে পারে বলেই বাড়ির পারিচারিকা নমিতা মোদককে গ্রেফতার করা হল বলে ডিসিপি পূর্ব অভিষেক মোদীর দাবি।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, বৃদ্ধ সত্যরঞ্জনবাবু খুনের সময় বাড়িতে একাই ছিলেন। ছেলের অনুপস্থিতে দিনের বেলায় বাড়ির দুই পরিচারিকা সুচরিতা মন্ডল, নমিতা মোদক ও রাতে সেবাকর্মী অভিনন্দন ঠাকুর সত্যরঞ্জনের দেখভাল করতেন। পুলিশ সকলকে আটক করে ম্যারাথন জেরা করে শেষমেষ তালাচাবি সহ বেশ কিছু সন্দেহজনক ক্লু পায়। ডিসিপি অভিষেক মোদী বলেন, বাড়িতে লুঠের জন্য এই খুন নয়। খুনের মোটিভ অন্য কিছু বলে জানান ডিসিপি। ডিসিপি আরও বলেন, তদন্তের স্বার্থে সব কিছু এখনই বলা সম্ভব নয়। ১৬ নভেম্বর সত্যরঞ্জনবাবু রাতে নন বিকালে খুন হন বলে দাবি পুলিশের। এই খুনের কিনারা করতে তদন্তে সবদিক খতিয়ে দেখছে পুলিস।

এদিন পুলিশি তদন্তের ফাঁকে ছেলে সুমিতের দাবি তাঁর বাবাকে পরিচিত কেউ খুন করেছে । ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক মোদী যদিও এই খুন কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ছেলে সুমিত খাঁড়া জড়িত কিনা সেই বিষয়টি খোলসা করেনি এদিনও। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে বিভিন্ন ক্লু থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তের জাল গুটিয়ে খুব শীঘ্রই আসল খুনিকে ধরতে পারবে বলে পুলিশ।

ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক মোদী
Like Us On Facebook