দুর্গাপুরেরে আইকিউ সিটি নারায়না মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল। পথ দুর্ঘটনায় আহত এক ব্যক্তির চিকিৎসার অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে বিচার চাইতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হল রোগীর আত্মীয়রা। বারবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় আইকিউ সিটি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ও পরিকাঠামো নিয়েই এবার প্রশ্ন উঠল। বারবার একই হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় প্রশাসনও বিষয়টি কড়া নজরে দেখছে বলে সূত্রের খবর।
জানা গেছে, বাঁকুড়ার বড়জোড়ার বাসিন্দা শ্যামপদ বাগদি ৭ জুলাই বড়জোড়ায় এক পথ দুর্ঘটনায় পায়ের হাড় ভেঙ্গে গেলে চিকিৎসার জন্য দুর্গাপুরের আইকিউ সিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, আইকিউসিটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রথমে ১০ জুলাই শ্যামাপদ বাবুকে পায়ের অপারেশনের জন্য বলে। কিন্তু অপারেশনের দিন শ্যামাপদবাবুর ছেলে হাসপাতালে গিয়ে দেখেন শ্যামাপদবাবুকে অপারেশনের আগে খালি পেটে রাখার পরিবর্তে সকালে ভরপেট খাইয়ে দেয় হাসপাতালের সেবা কর্মীরা অথচ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক সেই খবর না জেনে শ্যামপদবাবুকে অপারেশন করার জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাবার সময় শ্যামাপদবাবুর ছেলে রহিত বাগদি বাবার খাবারের কথা বলে চিকিৎসকদের অপারেশন করার বাধা দেন ওই দিন।
এরপর চিকিৎসকরা অপর আরেকদিন অপারেশন করার কথা জানালে চিকিৎসক ও হাসপাতালের সেবা কর্মীদের মধ্যে সমম্বয়ের অভাব দেখে চিকিৎসা বিভ্রাটের ভয়ে রহিতবাবু শ্যামাপদ বাবুকে চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিয়ে যাবার কথা চিকিৎসকদের জানালে চিকিৎসকরা রহিতবাবুর আবেদনে সাড়া না দিয়ে ফের ওই দিনই শ্যামপদবাবুর পায়ে অপারেশন করে বলে অভিযোগ শ্যামাপদবাবুর ছেলে রহিত বাগদির। রহিতবাবুর অভিযোগ, সন্ধ্যায় অপারেশনের পর রাত থেকে শ্যামাপদ বাবুর পায়ে প্রচুর রক্তক্ষরন শুরু হয় কিন্তু প্রয়োজনীয় রক্ত হাসপাতাল থেকে রোগীকে না দেওয়ায় শ্যামপদবাবুর অবস্থার চুড়ান্ত অবনতি হয়ে শ্যামাপদবাবুর মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু ঘটে।
এরপর ক্ষোভে ফেটে পড়ে মৃতের পরিবার। তাঁরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পুলিশের আশ্বাসে মৃতের পরিবারের লোকজন বিক্ষোভ তুলে নেন।
এর পর শ্যামাপদ বাবুর ছেলে দুর্গাপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে প্রশাসনের কাছে আইকিউ সিটি হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি জানান। রহিত বাগদির অভিযোগ, যে ভাবে বাবাকে সামান্য পায়ের হাড় ভাঙ্গার চিকিৎসা করার নামে চূড়ান্ত অবহেলা করে মেরে ফেলল তা একজনকে খুন করার শামিল। আমি দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। আমার বাবার নির্মম মৃত্যুর প্রশাসনিক বিচার চাই।