পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য রেডিও কিনতে ব্যস্ত বাড়ির মহিলারা

সপরিবারে রেডিওর সামনে বসে মহালয় শোনাটা বাঙালির একটা রেওয়াজ। মোবাইল ও এফ এম-এর বাড়বাড়ন্তে, রেডিও সেটের চাহিদার কথা আজকাল তেমন শোনা য়ায় না। কিন্তু মহালয়ার আগে এবার রেডিও সেটের চাহিদা তুঙ্গে । প্রতিদিন প্রচুর কাস্টমার ফিরে যাচ্ছে ইলেকট্রনিক্সের দোকান থেকে, মিলছে না রেডিও, হতাশ কাস্টমাররা। চাহিদা মতো রেডিওর জোগান নেই। রেডিও নির্মাতারাও চাহিদার আঁচ করতে পারেনি । বাজারে রেডিওর জোগান না থাকায়, পুরানো রেডিওসেট সারাতে ব্যাস্ত রেডিও টেকনিসিয়ানরা।

রাণিগঞ্জ বাজারের রেডিও টেকনিসিয়ান, দেবাশীষ দাস জানান গত সাত দিনে তিনি ৫০ টিরও বেশি পুরানো রেডিও সেট সারাই করেছেন। অপর দিকে খোসবাগান এলাকার ‘দুর্গা ইলেকট্রনিক্স’ দোকানের মালিক, দেবশীষ দত্ত জানান, মহালয়ার প্রাক্কালে রেডিওর চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যায়, রেডিওর চাহিদা মতো জোগান নেই। এমন চাহিদা হবে, রেডিও নির্মাতারাও আঁচ করতে পারেননি। প্রতিদিনই ১০-১২ টি রেডিও সেট বিক্রি হচ্ছে।

বর্ধমানের বোরহাটের এক বাসিন্দা পুরানো রেডিও সেট সারাতে এসে বললেন, সপরিবারে রেডিও-র সামনে বসে মহালয়ের কাকভোরে দেবীপক্ষে চন্ডীপাঠ শোনাটা বাঙালির একটা ঐতিহ্য। আমি আজও সেটা বজায় রেখেছি। আমার একটি পুরানো রেডিও সেট রয়েছে, তাই মহালয়ের প্রাক্কালে রেডিওর দোকানে এসেছিলাম পুরানো রেডিও সেটটি সারাতে, যাতে মহালয়ের দিনে কোনো অসুবিধা না হয়। আমি মনে করি নতুন প্রজন্ম যেন এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখে। রেডিওতে দেবীপক্ষে চন্ডীপাঠ শোনা এক নস্ট্যালজিক ব্যাপার। আমার ছোটবেলার এই রেওয়াজ, আজও বজায় রেখেছি।

বোঁয়াইচণ্ডীর এক গৃহবধূ জানান, পুজোর বাজার করতে এসে একটা নতুন রেডিও সেট কিনলাম। আমার শ্বশুরমশাইয়ের জন্য। তিনি রেডিওতেই মহালয় শুনতে পছন্দ করেন। পুরানো সেটটি খারাপ হয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর মহালয় শুনতে অসুবিধা হবে তাই আজ নতুন সেটটি নিয়ে গিয়ে তাঁর হাতে তুলে দেব।

বর্ধমানের সুভাষ চৌধুরি জানান, পরিবারের সকলের সঙ্গে কাকভোরে রেডিওতে দেবীপক্ষে চন্ডীপাঠ শোনার অনুভুতি আলাদা, অতুলনীয়। আমার পরিবারে আজও এই ঐতিহ্য বজায় রেখেছি। এই সময় অদ্ভুতভাবে কল্পনার জগতে বিচরণ ঘটে, এ এক অন্য অনুভূতি।

Like Us On Facebook