বাবা ধনঞ্জয় মেটে যখন গানের মাধ্যমে ব্যস্ত সরকারীভাবে মানুষকে ডেঙ্গু নিয়ে সচেতন করতে। তখন তাঁর পরিবারেই ডেঙ্গুর থাবা। সমাপ্তির বাবা একজন বাউল শিল্পী। সেই হিসাবেই গলসি থানার শিড়রাই পঞ্চায়েতে তিনি ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতার প্রচার অভিযানে সামিল হয়েছেন।
পূর্ব বর্ধমান জেলায় ডেঙ্গুর বলি হল ৯ বছরের সমাপ্তি মেটে। মৃত্যুর ঘটনায় রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে গোটা জেলা জুড়ে। মৃত সমাপ্তির বাড়ি গলসি থানার বিক্রমপুর গ্রামে। গত ৪ নভেম্বর জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় প্রথম তাকে ভর্তি করা হয় গলসির আদরাহাটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ৬ নভেম্বর তাকে নিয়ে আসা হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর ৮ তারিখে তার মৃত্যু হয়।
মৃতার বাবা জানিয়েছেন, সমাপ্তি বিক্রমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। গত ৪ তারিখে সমাপ্তি কাটোয়ায় তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যায়। ফেরে ৫ তারিখে। তারপর থেকেই জ্বরে আক্রান্ত হয়। এরপর প্রথমে তাকে আদরাহাটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে সমাপ্তিকে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই ধরা পড়ে ডেঙ্গু। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানোর চেষ্টাও করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। বর্ধমান জেলা ডেপুটি সিএমওএইচ-২ সুনেত্রা মজুমদার জানিয়েছেন, শিশুটিকে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে আসার সময়ই তার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল। তা সত্ত্বেও চিকিৎসকরা চেষ্টা করেছেন।
এদিকে, মেয়েকে হারিয়েও ডেঙ্গু প্রচার থেকে বিরত থাকছেন না ধনঞ্জয় মেটে। তিনি জানিয়েছেন, ডেঙ্গুতে তিনি তার মেয়েকে হারিয়েছেন, কিন্তু আর কোনো বাবা-মা যাতে সন্তানহারা না হন সেজন্যই তিনি তার বাউল গানের মাধ্যমে আরও বেশি করে প্রচার করবেন।