শাসক দলের নীচু তলার কর্মীদের আন্তরিক প্রচেষ্টয় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের আপ্ত সহায়ক সোমনাথ পালের উদ্যোগে যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যৌথ হস্তক্ষেপে দুর্গাপুরের এক মেধাবী পড়ুয়ার মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের কন্যাশ্রী প্রকল্পের বন্ধ হয়ে যাওয়া টাকা ফের ব্যংক অ্যাকাউন্টে ঢুকল। বন্ধ হয়ে যাওয়া কন্যাশ্রীর টাকা ফের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আসায় দুর্গাপুর থেকে নবান্ন সকলেই খুশির কথা জানায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্রীদের কল্যাণে কন্যাশ্রী প্রকল্প(কে-১) ঘোষণা করার পর নবম শ্রেণির ছাত্রী দুর্গাপুরের বিধান নগরের এডিডিএ কালীবাড়ি সংলগ্ন এলাকার সুদেষ্ণা মুষিব আবেদন করে। বিধান নগর গার্লস স্কুলে নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কন্যাশ্রীর টাকা পায় সুদেষ্ণা। এরপর মাধ্যমিক পাশ করে দুর্গাপুর টি এন হাইস্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয় সুদেষ্ণা। তারপর থেকাই কোন এক অজ্ঞাত কারণে তার অ্যাকাউন্টে কন্যাশ্রীর টাকা আসা বন্ধ হয়ে যায়। সুদেষ্ণা ভেবেছিল কোন কারণে টাকা হয়ত আটকে আছে পরে চলে আসবে।

সুদেষ্ণা বর্তমানে বিশ্বভারতীর ভূগোল অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। কলেজে ভর্তি হয়ে কন্যাশ্রী প্রকল্প(কে-২)-এর ফর্ম পুরণ করতে গিয়ে জানতে পারে তার অ্যাকাউন্টে সমস্যা আছে। কে-২ ফর্ম পূরণ করা যাবে না। কলেজে পড়ার খরচের কথা ভেবে মাথায় হাত পড়ে সুদেষ্ণার পরিবারের। গত দু’বছর ধরে দৌড়ঝাঁপ করেও কি কারণে সুদেষ্ণার কন্যাশ্রীর টাকা আসা বন্ধ হয়ে গেল তার কোন হদিশ পাননি বাবা প্রদ্যুত মুষিব। প্রদ্যুত বাবুর অভিযোগ, বন্ধ হয়ে যাওয়া টাকা ফের কিভাবে অ্যাকাউন্টে আসবে তার কোন সুলুক সন্ধান দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কোন দপ্তর। সুদেষ্ণা ও সুদেষ্ণার বাবা হতাশ হয়ে কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা পাওয়ার আসা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন।

আর্থিক অস্বচ্ছল সুদেষ্ণাদের ছোট্ট একটি মুদিখানার দোকান রয়েছে। সেই মুদিখানার দোকান পালা করে চালায় সুদেষ্ণা ও তার বাবা প্রদ্যুতবাবু। সুদেষ্ণার মা রীতা মুষিব দিনে স্কুলের মিড-ডে মিলের কাজ করেন। রাতে নিজেদের দোকানের সামনে রুটি বানিয়ে বিক্রি করেন। ছোট বোন সুস্মিতা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। ছোট্ট মুদিখানা দোকানের স্বল্প আয় থেকেই কোন রকমে চলছে মুষিব পরিবারের সংসার সহ দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচ। তাই কন্যাশ্রীর টাকায় যদি মেধাবী মেয়ে সুদেষ্ণার পড়াশোনায় একটু সাহায্য হয় সেই টানেই মুষিব পরিবারের এত দৌড়ঝাঁপ।

শেষমেশ বিধান নগর সেক্টর টু-সি’র তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী কল্যাণ আশিষ ঘোষ ও স্থানীয় সমাজসেবী অলীক রায় এ ব্যাপারে উদ্যোগী হন। তাঁরা জানান, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের আপ্ত সহায়ক সোমনাথ পালের মাধ্যমে যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কান পর্যন্ত পৌঁছয় সুদেষ্ণার কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। এরপর দুই মন্ত্রীর নির্দেশে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তড়িঘড়ি ফের চালু হয়ে যায় সুদেষ্ণার কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা আসা। অ্যাকাউন্টে ফের কন্যাশ্রীর টাকা আসা চালু হয়ে যাওয়ায় সুদেষ্ণার মুখে হাসি ফোটে। সুদেষ্ণার পরিবার সহ গোটা পাড়া রাজ্যের দুই মন্ত্রী ও সোমনাথ পালকে ধন্যবাদ জানান।

Like Us On Facebook