চিকিৎসকরা ব্রেন ডেথ ঘোষণা করার পর ছোট্ট মধুস্মিতার দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে যেতে দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতাল থেকে মুচিপাড়া হয়ে জাতীয় সড়ক ধরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল পর্যন্ত দীর্ঘ পথে রবিবার ‘গ্রীন করিডর’ করা হয়। অসমের বাসিন্দা সিআইএসএফ কর্মী দিলীপ বায়েন বাঁকুড়ার মেজিয়ায় কর্মরত। স্ত্রীর নাম অর্চনা বায়েন। দিলীপবাবু ও অর্চনাদেবীর দু’টি মেয়ে। বড় মেয়ে মধুস্মিতা। জন্ম থেকেই এপিলেপ্সিতে আক্রান্ত। গত ১২ নভেম্বর অসুস্থতার কারণে দিলীপবাবু ও অর্চনাদেবী মেয়ে মধুস্মিতাকে দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে ভর্তি করেন চিকিৎসার জন্য।

গতকাল, ১৭ নভেম্বর ভোর রাতে মধুস্মিতার ব্রেন ডেথ ঘোষণা করেন চিনিৎসকরা। এরপর দিলীপবাবু ও অর্চনাদেবী মধুস্মিতার অঙ্গদানে সম্মতি দেওয়ায় মিশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। শনিবার রাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি বিশেষ মেডিক্যাল টিম মধুস্মিতার দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অন্যের দেহে প্রতিস্থাপন করা যাবে কিনা তা খতিয়ে দেখে যাবার পর রবিবার সকাল থেকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতাল থেকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তা গ্রীন করিডর ঘোষণা করা হয়।

মধুস্মিতার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে যেতে কলকাতা থেকে ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরীর নেতৃত্বে দশ সদস্যের এক মেডিকেল টিম মিশন হাসপাতালে পৌঁছান রবিবার বিকেলে। বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে মধুস্মিতার দেহ থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নেওয়ার জন্য অপারেশন শুরু হয়। মিশন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরাও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছেন ওই মেডিকেল টিমকে বলে জানান মিশন হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ পার্থ পাল। পার্থ বাবু বলেন, মধুমিতার লিভার, কর্নিয়া ও কিডনি নেওয়ার অপারেশন চলছে। পার্থবাবুর দাবি, ১৩ বছরের একটি মেয়ের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানের এই ধরনের উদ্যোগ রাজ্যে প্রথম। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতাল পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তা এই ভাবে গ্রীন করিডর করে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ এই প্রথম রাজ্যে।

আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে রবিবার গ্রীন করিডরে দুশো পুলিশ কর্মী তিনজন এসিপি ও দু’জন ডিসিপি কর্মরত রয়েছেন বলে জানান দুর্গাপুরের ডিসিপি অভিষেক মোদী। ডিসিপি বলেন আশা করছি দু ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল টিম কলকাতা পৌঁছে যেতে পারবেন। সেই মর্মে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে জাতীয় সড়কে।





Like Us On Facebook