ছবি-সংগৃহীত

এবার ওষধি গুণসম্পন্ন, রোগ উপশমকারী ‘কড়কনাথ’ বা কালো মুরগির মাংস ও ডিমের চাহিদা রাজ্যর বিভিন্ন বাজারে ক্রমশ বাড়ছে। মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু সহ বিভিন্ন রাজ্য এই মুরগি চাষে সাফল্য এবং চাহিদা দেখে রাজ্যের প্রাণীসম্পদ দফতর এবার রাজ্যে ‘কড়কনাথ’ প্রজাতির মুরগি চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। জানা গেছে, এই কালো মুরগির মাংসে ফ্যাট ও কোলেস্টেরল কম এবং প্রোটিন ও আয়রণ বেশি মাত্রায় থাকার পাশাপাশি এই মুরগির মাংস সহজপাচ্য হওয়ায় এই মুরগির মাংসের চাহিদা ব্যাপক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন ‘কড়কনাথ’ মুরগির মাংস হার্ট, ডায়াবেটিস ও স্নায়ু রোগে আক্রান্তদের পক্ষে অত্যন্ত উপকারি।

পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলে ‘কড়কনাথ’ মুরগির চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন বলে দাবি কেশব ভারতী পালের। জানা গেছে, চার-পাঁচ মাসে এই মুরগির ওজন ১ কেজি মতো হয়ে যায় এবং ডিম দিতে শুরু করে। কালো মুরগির গুণাগুণ বাজারে ছড়িয়ে পড়তেই আসানসোলে কালো মুরগি কেজি প্রতি ৮০০-১০০০ টাকায় এবং এবং ডিম প্রায় ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এই মুরগির যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে তবে জোগান এখনও খুবই কম। আসানসোলে লাভজনক ‘কড়কনাথ’ মুরগির চাষের খবর ছড়িয়ে পড়তেই দুর্গাপুর, বর্ধমান সহ অন্যান্য জেলাতেও মুরগির দোকানে ক্রেতারা কালো মুরগির আমদানি নিয়ে যেমন খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছেন তেমনই বিক্রি বাড়ার আশায় মুরগির দোকানিরাও ‘কড়কনাথ’ মুরগি এনে বিক্রির ব্যাপারে খোঁজ খবর শুরু করেছেন।

দুর্লভ প্রজাতির কড়কনাথ চিকেনের উৎপত্তি মধ্যপ্রদেশের ঝাবুয়া জেলায়। ভারত ছাড়াও চিন ও ইন্দোনেশিয়ায় এই ধরণের মুরগি পাওয়া যায়। কৃষি বিজ্ঞানিদের কথায়, এই মুরগি নিয়মিত খেলে শরীরে শক্তি বাড়ে। দেশী বা ব্রয়লার মুরগির তুলনায় কড়কনাথ প্রজাতির মুরগির মাংসে ফ্যাট ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ ৪-৫ গুণ কম। অন্যান্য মুরগির তুলনায় প্রোটিন বেশ কিছুটা বেশী এবং প্রচুর পরিমাণে আয়রণ থাকে। এছাড়াও যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন বি১, বি২, বি৬, বি১২, সি, ই, নিয়াসিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, নিকোটিনিক অ্যাসিড থাকে। অ্যাজমা, হার্ট, ডায়াবেটিস, স্নায়ু রোগ সহ বিভিন্ন রোগীদের ক্ষেত্রে ‘কড়কনাথ’ মুরগির মাংস ও ডিম বিশেষ উপকারি বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

মহারাষ্ট্র তামিলনাড়ু ও মধ্যপ্রদেশে স্থানীয় পঞ্চায়েতগুলি গ্রামবাসীদের স্বনির্ভর করতে লাভজনক কড়কনাথ মুরগির চাষে উৎসাহ দিচ্ছে। এই মুরগি চাষ লাভজনক এবং চাহিদা দেখে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দফতরও কড়কনাথ মুরগি চাষে উৎসাহ দিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে। জানা গেছে, ‘কড়কনাথ’ মুরগির মাংসের রঙ কালো। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বেশি থাকায় রক্তের রঙও কালচে। তবে ডিম কালো হয় না। ডিমের রঙ লালচে বাদামী। সুস্বাদু, সহজপাচ্য ও ওষধি গুণসম্পন্ন হওয়ায় রাজ্য জুড়ে এখন ‘কড়কনাথ’ মুরগির চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।

ছবি-সংগৃহীত

ছবি-সংগৃহীত

Like Us On Facebook