অবশেষে দুই বর্ধমান জেলায় গঠিত হল সিপিএমের নতুন এরিয়া কমিটি। একইসঙ্গে প্রশাসনিকভাবে বর্ধমান জেলাকে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা হিসাবে ভাগ করার পর সোমবার সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমিটিও দুভাগে বিভক্ত হয়ে গেল। যদিও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের উপস্থিতিতে বর্ধমান জেলা সিপিএম পার্টি অফিসে জেলা কমিটির এই বিভাজন সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। এবার তা রাজ্য কমিটির কাছ চূড়ান্ত অনুমোদনের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে সিপিএমের নয়া জেলা কমিটি ঘোষণা করা হবে। পার্টিকে যুগোপযোগী করে তুলতে সিপিএমের বিভিন্ন গণসংগঠনগুলিকেও ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবার সিপিএমের জেলা অফিসে আসেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। দফায় দফায় এদিন তিনি বৈঠক করেন দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে। পূর্বতন বর্ধমান জেলা কমিটিকে ভেঙে দিয়ে এদিন পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির তালিকা জমা দেওয়া হয় তাঁর কাছে। এরই পাশাপাশি এদিন নতুন এরিয়া কমিটি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেন সূর্যকান্তবাবু। সিপিএমের রাজ্য কমিটির অন্যতম সদস্য অমল হালদার এদিন জানিয়েছেন, নবগঠিত সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটিতে সদস্য হয়েছেন ৪৪ জন। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে ২৪ জনকে নিয়ে। এছাড়াও সিপিএমের আভ্যন্তরীণ সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে ইতিমধ্যেই জোনাল কমিটি এবং লোকাল কমিটিগুলিকে অবলুপ্ত করে দিয়ে গঠিত হয়েছে এরিয়া কমিটি। ১৫ জনের এরিয়া কমিটির নীচে থাকবে ব্রাঞ্চ কমিটিগুলি। এদিন সূর্যকান্ত মিশ্র এই নবগঠিত এরিয়া কমিটিগুলি গঠন নিয়েও সবুজ সংকেত দিয়ে যান। অমলবাবু জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলায় মোট ৩০টি এরিয়া কমিটি গঠন হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমান জেলা গঠিত হয়েছে ২৩টি এরিয়া কমিটি। অমলবাবু জানিয়েছেন, এই এরিয়া কমিটিতে প্রায় ৫০ শতাংশ নতুন ছেলে উঠে এসেছে যা আগামী দিনে সিপিএম দলের ক্ষেত্রে রীতিমত ভাল হবে।

এদিন জেলা কমিটি বিভাজন এবং নয়া এরিয়া কমিটি গঠন নিয়ে সূর্যকান্তবাবু বর্ধমানে বৈঠক করার পাশাপাশি আসন্ন দুর্গাপুর পুর নিগমের ভোট নিয়েও দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন। অপরদিকে, অমলবাবু জানিয়েছেন, এদিনের বৈঠক থেকে আগামী দিনে বেশ কয়েকটি আন্দোলনের রূপরেখাও নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ৩১ আগষ্ট শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে বিশাল জমায়েত এবং ১১ সেপ্টেম্বরের জমায়েত। মূলত, চাষীদের ফসলের ন্যায্য দাম, জমি বিক্রির ক্ষেত্রে অস্বাভাবিকভাবে সরকারি রেভিন্যু বৃদ্ধি, বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রভৃতি ইস্যুতে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে চলেছেন। এরই পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, কেবলমাত্র সিপিএমের মূল সংগঠনের কাঠামোর পরিবর্তনই নয়, এরই পাশাপাশি বিভিন্ন গণসংগঠনগুলিকেও ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে।

Like Us On Facebook