৪২ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী প্রিয়াঙ্কী পাঁজার নির্বাচনী প্রচারের প্রস্তুতি মিটিং-এ কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের বক্তব্য রাখার ছবি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে ৪২ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের অনুগামী প্রিয়াঙ্কী পাঁজা, বিশ্বনাথবাবুর স্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রুমা পাড়িয়াল সহ আরো অনেক তৃণমূল কংগ্রস কর্মী ও বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের অনুগামীরা রয়েছেন। এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই বিতর্কের ঝড় ওঠে।

বিশ্বনাথবাবুর স্ত্রী রুমা পাড়িয়াল ও তাঁর অনুগামীরা তৃণমূলের হলেও বিশ্বনাথবাবু এখনও আইনগত ভাবে কংগ্রেসের বিধায়ক। স্বাভাবিক ভাবেই বির্তকের ঝড় উঠেছে শিল্পাঞ্চল জুড়ে। এতে কংগ্রেস বিধায়কের দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙ্গার অভিযোগে কংগ্রেস কর্মীদের অনেকেই ক্ষুব্ধ হন। প্রকাশ্যে বিশ্বনাথবাবুকে গুরুত্ব না দেওয়ার কথা বললেও নির্বাচনের মুখে কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়ালই যে কংগ্রেস কর্মী ও শিল্পাঞ্চল নেতাদের মাথা ব্যাথার কারণ সেই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।

শিল্পাঞ্চলে নির্বাচনের পূর্বে কংগ্রেসের বিধায়ক কংগ্রেসকে অক্সিজেন দেওয়ার পরিবর্তে ক্রমেই বিপন্ন করার অভিযোগে দলীয় কর্মীদের একাংশ দলের উপর তলায় অভিযোগের করার কথা জানান। সোমবার দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল বিধান সভার স্টাডিং কমিটির বৈঠকে ব্যস্ত থাকায় সদ্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের স্ত্রী তথা ৩০ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রুমা পাড়িয়াল বর্ধমান ডট কমকে বিতর্কিত ছবি নিয়ে বলেন, ‘প্রথমত বিশ্বনাথ পাড়িয়াল আমার স্বামী ও আমার রাজনৈতিক গুরু। বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের অনুগামীরাও তাঁকে গুরু জ্ঞানে মানেন। বিশ্বনাথের দেখানো রাজনৈতিক পথেই আমরা হাঁটছি। তাঁর কাছে আমরা শিক্ষানবিশ। রঙ না দেখে তিনি সব সময় আমাকে ও আমাদের সহকর্মীদের সাহায্য করবেন এটাই তো স্বাভাবিক। এতে দোষের কি আছে?’ রুমাদেবী আরও বলেন, ‘৪২ নং ওয়ার্ড থেকে গত দুর্গাপুর পৌর নির্বাচনে বিশ্বনাথ জয়ী হয়েছিলেন। এলাকার মানুষ চেয়েছিলেন আমি এই ওয়ার্ডে দাঁড়াই। আমার সহকর্মী প্রিয়াঙ্কী পাঁজা ৪২ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী। এলাকার মানুষের উন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের শরণাপন্ন হয়েছি আমি ও আমার সহকর্মীরা।’

বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের দলবদলের বিষয়টিকে বিশ্বনাথের ব্যক্তিগত বিষয় বলে রুমাদেবী বলেন, ‘দল আমাকে ৩০ নং ওয়ার্ডে প্রার্থী করেছে। আমরা নিজেদের মধ্য ঘরোয়া একটি বৈঠক করে গুরু বিশ্বনাথের কাছে রাজনৈতিক পরামর্শ নিচ্ছিলাম ২৩ জুলাই সন্ধ্যায়।’ এটা তৃণমূলের প্রকাশ্য প্রচার সভা নয় বলে দাবি করেন রুমা পাড়িয়াল। রুমাদেবীর পাল্টা প্রশ্ন, বিশ্বনাথ পড়িয়াল তাঁর স্ত্রী ও শিষ্যদের রাজনৈতিক শিক্ষা দান করতেই পারেন তাতে কি শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়ে যাবে? রুমা দেবী একজন দক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সুরেই বলেন, ‘দেশের বৃহত্তর স্বার্থে যদি কংগ্রেস সভা নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক জোট হয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন, তাহলে দুর্গাপুরের মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীদের পাশে দাঁড়ানোয় অন্যায়টা কোথায়?’ রুমাদেবী বলেন, ‘বিশ্বনাথ অর্থের লোভে নয়, ক্ষমতার লোভেও নয়, কেবল মাত্র মানুষের উন্নয়নের লোভে মানুষের মধ্যে থেকে কাজ করেন সেটাই এখন গাত্রদাহ অনেকের।’

Like Us On Facebook