জামুড়িয়ার বেসরকারি ইস্পাত কারখানার ফার্নেস অয়েল ভর্তি ট্যাঙ্কার ছিনতাই ও নিরাপত্তারক্ষী খুনের ঘটনায় সিআইডি তদন্ত শুরু হল। ভবানীভবনের দুঁদে গোয়েন্দারা কাঁকসা থানায় এসে বৃহস্পতিবার এই মামলার তদন্ত ভার নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়ে কাঁকসা থানা থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়। সঙ্গে শুক্রবার দুর্গাপুর আদালতে অভিযুক্তের জামিন না মঞ্জুর হওয়ায় অভিযুক্তকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলকাতা নিয়ে যায় সিআইডি টিম।
জানা গেছে, রাজস্থানের বাসিন্দা নিরাপত্তারক্ষী পবন কুমার ঝা একটি বেসরকারি নিরাপত্তা এজেন্সির মাধ্যমে জামুড়িয়ার ওই ইস্পাত কারখানায় নিয়োগ হন। ১৫ অক্টোবর কারখানা কর্তৃপক্ষ একটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা থেকে ট্যাঙ্কারে করে ফার্নেস অয়েল আনার জন্য নিরাপত্তারক্ষী পবন ঝাকে হলদিয়া পাঠায়। ১৬ অক্টোবর হলদিয়ার একটি পরিবহণ সংস্থার মাধ্যমে ভাড়া নেওয়া ট্যাঙ্কারটি করে হলদিয়া থেকে তেল নিয়ে জামুড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন পবন ঝা। ১৭ অক্টোবর ট্যাঙ্কারটি ধুলাগড় পার করে ডানকুনি পৌঁছে ডানকুনিতে ৩ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকে বলে জানা গেছে। তারপর ফের ট্যাঙ্কারটিকে নিয়ে চালক উদয় ঝা গলসি পৌঁছয়। কিন্তু ১৭ অক্টোবর শেষবারের মতো পবন কুমার ঝায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে কারখানা কর্তৃপক্ষ, তারপর সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। এদিকে ট্যাঙ্কার চালক ট্যাঙ্কারটিকে কাঁকসা এলাকায় এনে জাতীয় সড়কের ধারে দাঁড় করিয়ে চম্পট দেয়।
সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ও সঠিক সময়ে তেল ভর্তি ট্যাঙ্কারটি কারখানায় না পৌঁছনোয় কারখানা কর্তৃপক্ষ পুলিশের দ্বারস্থ হয়। পুলিশ খোঁজ শুরু করে। কাঁকসা থানার পুলিশ পরে জাতীয় সড়কের ধার থেকে খালি ট্যাঙ্কারটিকে উদ্ধার করে। ট্যাঙ্কারের চালক উদয় ঝাকে গ্রেফতার করে। জানা গেছে, উদয়ের বাড়ি কলকাতার মোমিনপুরে। পুলিশের অনুমান তেল চুরির সময় পবন বাধা দেওয়ায় পবনকে খুন করে দেহ লোপাট করে দেয় ট্যাঙ্কারের চালক উদয় ঝা। পবনের পক্ষে আইনজীবী জয়ন্ত সরকার বলেন, অভিযুক্ত ট্যাঙ্কার চালক উদয় ঝা নিরাপত্তারক্ষী পবন কুমার ঝাকে খুন করেছে। কিন্তু দেহ কোথায় ফেলে দিয়েছে তা সঠিক ভাবে বলছে না। যেসব জায়গার কথা পুলিশকে বলেছে সেই সব জায়গায় দেহ খুঁজে পায়নি পুলিশ। তাই বৃহস্পতিবার সিআইডি মামলার তদন্তভার হাতে নিয়েছে।