ভাগাড় কাণ্ডের জেরে চারিদিকে মাংস নিয়ে হৈ চৈ-এর ঘটনায় এবার পথে নামল বর্ধমান পুরসভা। শুক্রবার থেকে শুরু হল এই ঘটনায় পুর অভিযান। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, গোটা জেলা জুড়েই এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসকদের কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। কোথাও কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি দেখলেই দ্রুত জেলাস্তরে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে, শুক্রবার দুপুরে থেকে বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান ডা. স্বরূপ দত্তের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল হানা দেয় এদিন বর্ধমান শহরের দুটি অভিজাত হোটেল ও বোর্ডিং-এর পাশাপাশি তিনটি ফাষ্ট ফুডের দোকানে। এদিন ঢলদিঘীর রাধানগর পাড়ায় একটি অভিজাত হোটেলে হানা দেন প্রতিনিধিদলটি। হোটেলের রান্নাঘরে গিয়ে রীতিমত বিস্ময় প্রকাশ করেন তাঁরা। এখানে ফ্রিজের মধ্যে বেশ কয়েকদিন আগেকার তৈরি শাক রান্না করে রাখা রয়েছে। যার ওপর ছত্রাক সৃষ্টি হয়েছে। মাংসের ওপর এক পুরু কালো আবরণ। প্রতিনিধি দলটি এই সমস্ত খাবারের নমুনাও সংগ্রহ করেন। পরিদর্শনের সময় হোটেলে বেশ কয়েকজন খাবার টেবিলে খাবারের অর্ডার দিয়ে বসেছিলেন। পুরপতি তাঁদের কাছে এগিয়ে গিয়ে সরাসরি জানিয়ে দেন, খাবার গ্রহণ করার আগে যেন তাঁরা দেখে নেন কি ধরণের পচা খাবার তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছে। এই হোটেলের খাবারের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রতিনিধিদলটি রওনা দেন পাশের অন্য একটি অভিজাত হোটেলে। সেখানেও ফ্রিজ থেকে উদ্ধার হয় দীর্ঘদিন ধরে রেখে দেওয়া মাছ ও মাংস। পরিস্থিতি দেখে রীতিমত তিরস্কার করেন পুরপতি হোটেল কর্মীদের। এখানেও খাবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপরই তাঁরা রওনা দেন তিনটি ফাষ্ট ফুডের দোকানে। তার মধ্যে একটি বিরিয়ানির দোকানে কিছু পাওয়া না গেলেও অন্য দুটি দোকানের রান্নাঘরে দীর্ঘদিনের পুরনো মাছ মাংসের নমুনা সংগ্রহ করেন। পুরপতি ডা. স্বরূপ দত্ত জানিয়েছেন, এই অভিযান তাঁরা লাগাতারই করবেন। মানুষের জীবন নিয়ে এই ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করার জন্য তাঁরা চেষ্টা করবেন।

তিনি জানিয়েছেন, সংগৃহীত নমুনা কলকাতায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। সেখান থেকে রিপোর্ট আসার পর তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সেক্ষেত্রে হোটেল ও দোকান পুরোপুরি বন্ধও করে দেওয়া হবে। যদিও এদিন পুরপতি ক্ষোভের সঙ্গেই জানিয়েছেন, এগুলিকে নিয়মিত দেখভাল করার মত সরকারী পরিকাঠামো এখনও নেই। দুই বর্ধমান জেলায় এই ধরণের কোনো দপ্তরই নেই। আবার পুরসভার এব্যাপারে ক্ষমতাও সীমিত। তবুও তাঁরা চেষ্টা করবেন। অন্যদিকে, এদিন অভিযান চালানো একটি বিরিয়ানি দোকানের মালিক রতন শোনকার জানিয়েছেন, পুরসভার এই উদ্যোগকে তাঁরা স্বাগত জানাচ্ছেন। এই ধরণের অভিযান লাগাতার হোক। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য সকলের ক্ষতি যেন না হয়।

Like Us On Facebook