সরস্বতী পুজো অর্থাৎ বাঙালির অঘোষিত প্রেম দিবসের পরদিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্লস এবং বয়েজ হস্টেলের মধ্যে তত্ত্ব আদানপ্রদানের প্রাচীন একটি রীতি। আর সেই রীতির হাত ধরেই বসন্ত পঞ্চমীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ একটি মন ছুঁয়ে যায় আর একটি মন। বিদ্যাং দেহি – বসন্তপঞ্চমীতে দেবী সরস্বতীর কাছে শুধু কি এই প্রার্থনা করেই ক্ষান্ত থাকেন ছাত্রছাত্রীরা? মনের গোপনে লুকিয়ে রাখা একান্ত ইচ্ছেটিও অনেক পড়ুয়া আজকের দিনে প্রকাশ করে দেন সদ্য যৌবনে পা রাখা ছাত্র-ছাত্রীরা।

চিরাচরিত জিন্স-টপ, সালোয়ার-কুর্তা ছেড়ে মেয়েদের পরনে আজ রঙিন শাড়ি, এলোচুল কিংবা খোঁপায় ফুল। ছেলেরাই বা কম কিসে? পাঞ্জাবি-পাজামায় দিব্যি পরিণত বয়স্কদের মতো আপ্যায়ণের ব্যস্ততা শরীরী ভাষায়। এদিন প্রথমে ছাত্রদের হস্টেল থেকে ফল, মিষ্টি, চিপস, চকলেটে ভরা তত্ত্বের ডালি পৌঁছে যায় ছাত্রীদের মীরাবাঈ, নিবেদিতা, প্রীতিলতা, সরোজিনী, গার্গী হস্টেলে। এই দিনটায় গার্লস হস্টেলের গেটে তাঁদের বাধা দেওয়ার জন্য কেউ থাকে না। আর তারপর, রাত জেগে নিজেদের সাজানো তত্ত্ব নিয়ে মেয়ের দল পৌঁছে যায় অরবিন্দ, চিত্তরঞ্জন, নেতাজি, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্র কিংবা আইনস্টাইন হস্টেলে। সঙ্গে শঙ্খ, ঢাক। রাস্তায় সে এক দেখার মতো দৃশ্য। অনেকেই দাঁড়িয়ে পড়ে পথ ছেড়ে দেন ছাত্র-ছাত্রীদের। তত্ত্ব সাজানো আর আলপনা আঁকা, এই দুই কাজে ছাত্র-ছাত্রীরা একে অপরকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। অলিখিত এই প্রতিযোগিতার মাঝে যেন বন্ধুত্বের বন্ধন আরও দৃঢ় হয়।





Like Us On Facebook