বর্ধমানের বিতর্কিত অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমে শেষ পর্যন্ত বন্ধের নোটিশ দিল জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। সোমবার জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্যাধিকারিক সহ জেলা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত মনিটরিং কমিটির একদল প্রতিনিধি অন্নপূর্ণা নার্সিংহোম পরিদর্শনে যান। তারপরই নার্সিংহোমের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে বন্ধের নোটিশ ধরিয়ে দেন।

এদিন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্যাধিকারিক ডা. প্রণব রায় জানিয়েছেন, এদিন তাঁরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি টিম অন্নপূর্ণা নার্সিংহোমে যান। সেই সময় ৬জন রোগী ভর্তি ছিলেন। কিন্তু নার্সিংহোম খুঁজেও দেখা মেলেনি কোনো ডাক্তার, নার্সের। কয়েকজন কর্মী ইতঃস্তত ঘুরে বেড়ালেও একটি নার্সিংহোমের ন্যূনতম শর্ত সর্বক্ষণের জন্য ডাক্তার ও নার্স থাকার কথা থাকলেও তা পাওয়া যায়নি। আর তাই এদিন থেকে সমস্ত রোগী ভর্তি বন্ধ সহ গোটা নার্সিংহোমকেই বন্ধ করে দেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, ২০১৬ সালেও এই নার্সিংহোম পরিদর্শনে গিয়ে একাধিক অনিয়ম এবং নার্সিংহোম সংক্রান্ত নিয়ম না মানার জন্য জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর নার্সিংহোমটি বন্ধ করে দেন। এদিন ডা. প্রণব রায় জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে ওই নার্সিংহোমের পরিকাঠামো ঠিক না থাকায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে মালিক পরিবর্তন তথা হাতবদল করে ফের তারা পরিকাঠামো ঠিক করে অনলাইনে আবেদন করার পর তাঁরা পরিদর্শনে গিয়ে সবকিছু ঠিকঠাক আছে বলে দেখেন। তারপরই নার্সিংহোম খোলার অনুমতি তথা লাইসেন্স দেওয়া হয়। কিন্তু ফের সেই একই ঘটনা ঘটায় এদিন ফের নার্সিংহোম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, যে ৬জন রোগী ভর্তি রয়েছেন তাদের অন্যত্র সরিয়ে দেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বীরভূমের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অরিজিত দাসের মৃত্যুর ঘটনায় শিরোনামে উঠে এসেছে এই নার্সিংহোম। মেয়াদ উত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, নন টেকিনিসিয়ানদের দিয়ে কাজ করানো, ডাক্তারি সার্টিফিকেট না থাকা সত্ত্বেও তাদের ডাক্তার সাজিয়ে কাজ করানো প্রভৃতি একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে। এরপরই নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। এব্যাপার জোরদার তদন্তও শুরু হয়েছে। ডা. প্রণব রায় জানিয়েছেন, মাঝে মধ্যেই তাঁরা নার্সিংহোমেগুলিতে আচমকা পরিদর্শন করেন। ত্রুটি দেখলেই তাদের নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক এই ঘটনার পর ফের তারা অভিযানে নামছেন।

Like Us On Facebook