আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে দুর্গাপুরের স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব যদি সিপিএমের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করে সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের প্রদেশ নেতৃত্ব কোন ভাবেই বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। দুর্গাপুরে মঙ্গলবার আসানসোল দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে রুগ্ন ও বন্ধ কলকারখানা পুনরুজ্জীবনের দাবিতে দুর্গাপুর আদালতের সামনে কংগ্রেসের এক দলীয় সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে একথা জানান কংগ্রেস সাংসদ ও প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। অধীরবাবু বলেন গত বিধানসভা নির্বাচনেও সিপিএমের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা ছিল এবং ফলও ভাল হয়েছে কিন্ত সিপিএম নির্বাচনী সমঝোতা নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করলেও কংগ্রেস কখনো তা করেনি। অধীরবাবু রাজ্যে বিজেপি ও সংঘ পরিবারের উত্থান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করে বলেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধীশূন্য রাজনীতি ও রাজ্যে কংগ্রেসকে শেষ করার কৌশলের জন্যই বাংলায় বিজেপি সহ সংঘ পরিবারের উত্থান হয়েছে।  সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অধীরবাবু সারদা ও রোজভ্যালি কান্ডে একের পর এক তৃণমূলের বিধায়ক সাংসদ জেল যাবার পর ফের নারদ কান্ডে সিবিআই ১৩ জন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক সাংসদ মন্ত্রীর নামে এফআইআর করায় কটাক্ষ করে বলেন এবার থেকে ভুবনেশ্বর জেল থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস সরকার পরিচালিত হবে এবং দুর্নীতির শীর্ষে উঠে গিনেস বুকে নাম তুলবে। এদিন শাসকদল তৃণমূল সরকারকে অধীরবাবু আলিবাবা ও ৪০ চোর বলে উপহাস করেন। একই ভাবে শিল্পায়নের নামে মুখ্যমন্ত্রী কোটি কোটি টাকা অপচয় করে বাংলার মানুষকে ধোঁকা দিতে বিশ্ব শিল্প সম্মেলন করছেন বলে অধীরবাবু এক পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। সিঙ্গুরে টাটাদের তাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাংলার শিল্পায়নের ভবিষ্যত শ্মশানে পরিণত হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন অধীরবাবু এদিন। একই ভাবে দুর্গাপুরের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট সহ দেশের তিনটি বৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা কেন্দ্রের   মোদী সরকার বেসরকারি হাতে বেচতে চলেছে বলে উল্লেখ করে কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকারকে মানুষ সরানোর ফল পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। বর্তমানে কেন্দ্রের বিজেপি ও রাজ্যে তৃণমূল সরকার তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনাগুলিকে নাম পরিবর্ত্তন করে মানুষকে বোকা বানাচ্ছে বলে দাবি করেন অধীরবাবু। নরেন্দ্র মোদীর ডিজিটাল ইন্ডিয়া নিয়ে একহাত নেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। অধীরবাবু এদিন তৃনমুল ও বিজেপি নিয়ে দলীয় সভায় দীর্ঘ সময় ব্যয় করলেও এদিন দুর্গাপুর ও আসন্ন দুর্গাপুর পুরনির্বাচন সহ শিল্পাঞ্চলের কংগ্রেসের সংগঠন মজবুত করার ও আগামী দিনে আন্দোলনের কোন  নতুন হদিশ না দেখনোয় কংগ্রেসের শিল্পাঞ্চলের দলীয় কর্মীরা হতাশ হন। সময়ে সাথ না দেওয়ার অভিযোগ তুলে এদিন অনেক কংগ্রেসের শ্রমিক ও বর্ষীয়ান নেতা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর সভা বয়কট করেন। দুর্গাপুরের সভা সেরে অধীরবাবু কাটোয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন এদিন।

Like Us On Facebook